Sunday, March 28, 2010

লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে হলুদ

লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে হলুদ

কাবুল -তরকারির সাধারন উপকরণ হলুদের মধ্যে এমন একটি উপাদান পাওয়া গেছে যা লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি কমায়। বুধবার অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীরা একথা জানিয়েছেন।

গাট নামক একটি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীরা ইদুরকে কারকুমিন নামের এ উপাদান খাইয়ে দেখেছেন যে তা নষ্ট হয়ে যাওয়া, ব্লক ও ক্ষতযুক্ত লিভার কোষের প্রদাহ কমায়।

কারকুমিন উপাদানের কারণেই হলুদের রং উজ্জ্বল হলুদ। এর রোগ প্রতিরোধক গুণ রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়ক হতে পারে--এমন আভাস মিলেছিল আগের কয়েকটি গবেষণাতেই।

অন্য কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, খাওয়ার পরে কারকুমিন দ্রুত ক্যান্সার প্রতিরোধক কার্যকারিতা হারাতে থাকলেও এটি ক্যান্সার টিউমার প্রতিরোধ করে। আর যারা বেশি বেশি হলুদ দেওয়া তরকারি খায় তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

অস্ট্রিয়ার গ্রাজ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল ট্রানারের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল চার কিংবা আট সপ্তাহ ধরে খাবারের সঙ্গে কারকুমিন দেয়ার আগে ও পরে যকৃতের প্রদাহে আক্রান্ত ইদুরের কোষ ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে যে ফল পেয়েছেন তাতে দেখা গেছে, কারকুমিন খাওয়া ইদুরগুলোর যকৃতের ব্লক কমাসহ কোষের ক্ষতও কমেছে।

কলকাতায় ব্যাংক এ মিলবে মায়ের বুকের দুধ

কলকাতায় ব্যাংক এ মিলবে মায়ের বুকের দুধ সুব্রত আচার্য্য, কলকাতাসন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মা মারা গেলেন। ভূমিষ্ঠ শিশুটি ক্ষুধায় ছটফট করছে। এই মুহূর্তে তার সবচেয়ে দরকার মায়ের দুধ। এখন কী হবে? এ রকম পরিস্থিতি ও মায়ের দুধের অভাবগ্রস্ত শিশুদের কথা চিন্তা করে ভারতে মাতৃদুগ্ধ ব্যাংক গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথম ব্যাংকটি হতে যাচ্ছে কলকাতার সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে। এ উদ্যোগ বিশ্বে নতুন না হলেও উপমহাদেশে প্রথম বলে দাবি করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
'
শেঠ সুখলাল করোনারি মেমোরিয়াল হাসপাতাল' (এসএসকেএম), যেটি পিজি হাসপাতাল নামেও পরিচিত, এর শিশু বিভাগে এই ব্যাংক স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত। এটা সফল হলে রাজ্যের ১৮ জেলা শহরের প্রধান প্রধান সরকারি হাসপাতালেও তা স্থাপন করা হবে। পিজি হাসপাতালের ম্যাটারনিটি বিভাগে ৫০টি আসন রয়েছে।
প্রতিদিন সেখানে গড়ে ৪০টি শিশু থাকে। ওই শিশুদের কারো যদি মায়ের মৃত্যু হয় বা মায়ের পর্যাপ্ত দুধ না হয় তাহলে শিশুকে হাসপাতালের ব্যাংক থেকে দুধ এনে খাওয়ানো হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যে এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মৌখিকভাবে অনাপত্তির কথা জানিয়েছে।
হাসপাতালের সুপার ডা. দেবাশীষ ভট্টাচার্য বলেছেন, 'যে মায়েরা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ানোর পরেও অনেক দুধ উদ্বৃত্ত থাকে বলে মনে করেন, মূলত তাদেরই ব্যাংকে দুধ দান করায় উসাহিত করা হবে। কিংবা মনে করেন, যেসব সন্তান বুকের দুধ কম খেতে চাইছে, তাদের মায়েরাও দুধ ব্যাংকে দান করতে পারেন।' তিন বলেন, 'রক্তদানের মতোই সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এ ব্যাপারে জনমত তৈরি করা হবে।'
মাতৃদুগ্ধ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চিন্তার সঙ্গে জড়িত এসএসকেএমের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. অরুণ সিং বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সিজারিয়ান পদ্ধতিতে শিশু ভূমিষ্ঠ হলে কিংবা কোনো কারণে শিশু অসুস্থ হলে তাদের কৌটার দুধ দেওয়া হয়_ এটা শিশুর পক্ষে ভালো নয়। সুস্থ মায়ের বুকের অতিরিক্তি দুধ প্রয়োজনে পাম্প করে বের করে দেওয়া হয়। মা যদি রাজি হন, তবে ওই দুধও ব্যাংকে দান করতে পারেন। যেটা পরে অন্য শিশু খেয়ে বাঁচতে পারবে।'
তিনি জানান, ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওই বুকের দুধ সংরক্ষিত থাকবে। এভাবে কমপক্ষে এক বছর দুধ সংরক্ষণ করে রাখা যাবে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার মিত্র জানান, নরওয়ে থেকে আট সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিসক দল আগামী সপ্তাহে কলকাতা আসছে। তারা ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য যাবতীয় ধারণা দেবে, তারপরই কাজ শুরু হবে। হাসপাতালে ম্যাটারনিটি বিভাগের ১৪ নম্বর বেডে শুয়ে থাকা সদ্য পুত্রসন্তানের জননী পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাতৃদুগ্ধ ব্যাংক গঠনের কথা শুনে বললেন, 'এ ধরনের উদ্যোগ খুবই ভালো। মায়ের দুধের বিকল্প নেই। সদ্যজাতদের যেসব মায়ের দুধ কম হয়, তাদের জন্যও যেমন দরকার হবে ব্যাংক, আবার যে মায়েদের বুকের দুধ উদ্বৃত্ত থাকে, তাঁরাও দান করতে পারেন।